খালের উপর আর, সি, সি পিলার

বেতুয়া খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ: বর্ষণের পানি চলাচলে বিঘ্ন!

প্রকাশিত: ১২:১৪ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২০

Warning: Undefined array key "mode" in /home/vorercoxb/public_html/wp-content/plugins/sitespeaker-widget/sitespeaker.php on line 13
print news

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বেতুয়া খাল এক সময় প্রমত্তা নদী ছিল। প্রবাহিত খরস্রোতে বেতুয়া খাল দিয়ে কত নৌকা সাম্পান অবাধ বিচরণ ছিল। ছিল জোয়ার-ভাটার উত্তাল তরঙ্গের থৈ থৈ জল রাশি। ছিল জলকেলির উত্থান পতনও। এই বেতুয়া খাল, মাতামুহুরী নদীর একটি উপ-শাখা নদী বা খাল।

ফকিরা মোড়া (পাহাড়)র পাদদেশ হয়ে পূর্ব দিক থেকে মাতামুহুরী নদীর দু’টি শাখা; একটি উত্তর দিক হয়ে আরেকটি দক্ষিণ -পশ্চিম দিক হয়ে বয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। এরই একটি হল বেতুয়া খাল। কালের আবর্তে প্রবাহিত খরস্রোতা বেতুয়া খালটি এখন আর নেই।

এই বেতুয়া খালের নামানুসারে ফকিরা মোড়ার তলদেশে বর্তমান বেতুয়া বাজারটি স্থাপিত হয়। আর বেতুয়া খালের তীরে বসতি হয়েছে বলেই বি,এম,চর ইউনিয়নের একটি গ্রাম বেতুয়ারকূল নামে নাম করণ করা হয়েছে।

এক সময় বেতুয়া খাল দিয়ে নৌকা সাম্পান করে উপকূলীয় কুতুবদিয়া, মহেশখালী, ধলঘাট,পেকুয়া, বদর খালীর মানুষ সাপ্তাহে দুই বার বেতুয়ায়া বাজার/হাট থেকে সওদাপাতি করে নিয়ে যেত।
received 265113621462633
প্রমত্তা সেই বেতুয়া খাল এখন ভরাট হয়ে গেছে। খালটি কবে মরে গিয়ে পরিণত হয়েছে অতি সরু একটি নালা; তার সঠিক কোন সন-তারিখ কারো জানা নেই।
যতটুকু খালের অবশিষ্ট আছে তা ভূমি খেকোরা ক্রমশ দখল করে গ্রাস করে ফেলতেছে।

তবে বেতুয়াখালের উজান থেকে ভাটিতে যত দূর যাওয়া যাবেই এর অস্তিত্ব কত যে বিস্তৃত তা দেখলে বুঝা যায়। যেমন কুমির খালী ও সিকদার খাল হয়ে মাতামুহুরী নদীতে মিলন ঘটেছে।

প্রতিবছর বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে মাঝেমধ্যে এর সামান্য কিছু খালের দৃশ্যের দেখা মিলে, তখন এই লোকালয়ে থৈ থৈ বানের পানিতে একাকার হয়ে চারি দিকে জলমগ্ন হয়ে যায়।

এই বেতুয়া খালটি পূর্ব বড় ভেওলা ও ভেওলা মানিক চর ইউনিয়নের সীমান্তের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। তাই দুই ইউনিয়নের বৃষ্টি ও বানের পানি নিষ্কাশনের এক মাত্র এই ভরা খালটি, যুগ যুগ ধরে ভূমিদস্যু ও খাল খেকোদের দখলের দৌরাত্ম্যে প্রায় বিলীন হতে চলছে। ইতোমধ্যে প্রায় দখলও হয়ে গেছে।

আর যে যেভাবেই পারে মাটি ভরাট করে এই খালের উপর আর, সি, সি পিলার তৈরী করে স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে।

তাজমহল কমিনিউটি ক্লাব ও ব্যাংক এশিয়ার স্থাপনার দিকে তাকালেই দেখা যায় ভরা খালটি কত টুকু দখল করে গ্রাসে করে ফেলেছে।

আবার অনেকেই মাছ চাষের জন্য সরকার থেকে লীজ নিয়ে তৈরী করে ফেলেছে বসবাসের জন্য বাড়ি ঘর। দিনের পর দিন খালটি দখলের ফলে যথাযথ পানি নিষ্কাশনের ব্যাঘাত ঘটেতেছে।

গত কয়েকদিন ধরেএকটু ভারী বর্ষণে পানি বন্দি হয়ে পড়ে শত শত পরিবার। এমনকি টয়েলেট/ শৌচাগারের পানি একাকার হয়ে মারাত্মক দূষনের সম্মুখীন হন ভুক্তভোগী পরিবার গুলো।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের খিলছাদক এলাকার জনৈক মেম্বার কয়েক বছর আগে খালের উপর সরু নাসী বসিয়ে খালের দুই পাড়ের মাঝে তাজমহল কমিউনিটি সেন্টার নামের ৩ তলার বড় সড় ভবন নির্মাণ করার ফলে পানি চকাচলে-র গতি পথ মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। এভাবে খালটির বড় একটা অংশ দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে এক দল ভূমিদস্যু।

এদিকে মরহুম মোস্তাক সওদাগরের ওয়ারিশগণ সহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে খাল দখলের অভিযোগ উঠেছে।

আজ ১৯ জুন শুক্রবার বেতুয়াবাজার স্টোর স্টেশনে পূর্ব বড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল ও বিএমচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় এলাকাবাসী ও যুব সমাজ নিয়ে খাল উদ্ধারের করনীয় সম্পর্কে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে চেয়ারম্যান দ্বয় বেতুয়া খালের দখল হয়ে যাওয়া স্পট গুলো পরিদর্শন করেন। এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর যথাযথ অভিযোগ দায়ের করে খালটি পুনরুদ্ধার করার আস্বস্ত করেন।

এ সমস্ত অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় খাল ক্রমশই ছোট হয়ে গিয়ে সরু নালায় পরিনত হয়েছে। যার ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টি হলেই খালের পানি লোকালয় মানুষের বাড়ি-ঘরে ঢুকে একাকার হয়ে যায়।

এভাবে প্রতিযোগিতা মূলক ভাবে বেতুয়া খালটি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে থাকলে খালটি ক্রমশ আরো সংকুচিত হয়ে যাবেই।

এই ঐতিহ্যবাহী খালটি দখল মুক্ত করে পুনঃখনন করে অবাধ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সচেতন মহল।