স্কুলশিক্ষিকাকে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২০
ছবি- প্রতীকী
print news

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, গর্ভধারণের তিন মাসের মাথায় ওষুধ খেয়ে ভ্রুণ হত্যার জন্য চাপ দেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা


রাজধানীর দক্ষিণ কাফরুল এলাকার এক স্কুলশিক্ষিকা তার প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগ এনেছেন।

গত ১৬ জুন ঢাকা উত্তরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের আইন বিষয়ক সম্পাদক এসএম এনামুল হক পলকের (৪৫) বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন ওই শিক্ষিকা। তিনি অভিযোগ করেছেন, ওই নেতার স্বজন ও বন্ধুরা মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ঢাকা ট্রিবিউনের পক্ষ থেকে একাধিকবার চেষ্টা করেও এ বিষয়ে পলকের বক্তব্য জানা যায়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সোহেল রানা জানান, মামলা হওয়ার পর পলক গা ঢাকা দিয়েছেন।

ওই শিক্ষিকা ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, দক্ষিণ কাফরুল এলাকার বিদ্যালয়টির গভর্নর বডির চেয়ারম্যান পলকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

তিনি বলেন, “তিনি বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি বিবাহিত ও সন্তানের জনক হওয়ায় আমি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। কিন্তু তিনি আমাকে বিয়ের জন্য জোর করতে থাকেন। তিনি বলেন, দুই স্ত্রীকে ভরণ-পোষণের মতো যথেষ্ট অর্থ রয়েছে তার।”

ওই নারীর ভাষ্য, অবশেষে ২০১৯ সালের ১৬ জুন তিনি পলকের প্রস্তাবে রাজি হন। কিন্তু তারপর পলক তাকে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করান।

একপর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়লে গর্ভধারণের তিন মাসের মাথায় ওষুধ খেয়ে ভ্রুণ হত্যার জন্য চাপ দেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা জানান, গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার চাকরি পলকের সম্মান ক্ষুণ্ণ করছে, এই অযুহাতে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্যও বলেন তিনি।

“তাই আমি গত ডিসেম্বরে চাকরি ছেড়ে দেই। চলতি বছরের ৫ মে তিনি আবারও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য বলেন। কিন্তু আমি আবার গর্ভবতী হয়ে পড়লে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।”

ওই শিক্ষিকা বলেন, স্থানীয়রা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পুলক তাতে সায় দেননি।

“তাই আমি গত ১৬ জুন এনামুল হক পুলকের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করি।”

এখন পুলকের বন্ধু-স্বজনদের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েছেন রাজধানীর বাইরে থেকে আসা ওই নারী।

তিনি বলেন, “একটা মেয়ে হয়ে আর কতদিন এভাবে লড়াই করব? সে (পলক) এই এলাকার প্রভাবশালী। আমি আতঙ্কে আছি।”

এ বিষয়ে কাফরুল থানার এসআই ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।

এসআই বলেন, “ওই নারীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য (গর্ভধারণ সংক্রান্ত) পাঠানো হয়েছে। আমরা এখনও রিপোর্ট পাইনি।”

ঢাকা ট্রিবিউন