ফেসবুকে প্রতারণায় টাকা আত্মসাৎ: বাংলাদেশিসহ ১৩ নাইজেরিয়ান গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১০:১১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২০

Warning: Undefined array key "mode" in /home/vorercoxb/public_html/wp-content/plugins/sitespeaker-widget/sitespeaker.php on line 13
print news

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বন্ধুত্বের পর দামি উপহার দেয়ার নামে প্রতারণা করে গত কয়েক মাসে পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র। অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধানের পর রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে এক বাংলাদেশি নারী ও ১২ নাইজেরিয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ বিভাগ (সিআইডি)।


বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার ।

এ সময়ে তাদের কাছ থেকে পাঁচটি ল্যাপটপ, ১৪টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন এবং অসংখ্য সিম উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার বাংলাদেশির নাম রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন।

 

শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের প্রতারণার শিকার হয়ে একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তারা অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সাথে ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে। বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে তারা একটি ম্যাসেঞ্জার থেকে একটি উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। পরে ম্যাসেঞ্জারে এইসব মূল্যবান সামগ্রীর এয়ার লাইন বুকিংয়ে ডকুমেন্ট পাঠায়। এরপর এসব উপহারের বক্সে কয়েক মিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে বলেও ভুক্তভোগীকে জানায়। তারা ভুক্তভোগীকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদাম থেকে রিসিভ করতে বলে। এ সময়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী রাহাত আরা খামন ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন নিজেকে কাস্টমস কমিশনার পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে চার লাখ ২৫ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে বলে। তারা এই টাকা কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। তাদের পাঠানো উপহার সংগ্রহ না করলে তাদের আইনি জটিলতার ভয় দেখায় এই প্রতারক চক্রটি।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ফলে ভুক্তভোগী তাদের দেয়া বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিন লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা দেন। একইভাবে গ্রেপ্তারকৃতরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে সারাদেশ থেকে দুই মাসের মধ্যে শতাধিক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে এ ধরনের প্রতারণা করে আসছে। তাদের বাংলাদেশে অবস্থানের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। তাদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একটি মামলা করেছে সিআইডি।

 

জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, বাড়ির মালিকেরা কোনো বিদেশি নাগরিককে বাড়ি ভাড়া দেয়ার আগে তাদের বৈধ কাগজপত্র পাসপোর্ট যাচাই করে বাড়ি ভাড়া দেবেন। ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগে অপরিচিত ব্যক্তির ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করা থেকে বিরত থাকবেন। প্রতিবেশী বা এলাকায় কোনো বিদেশি ব্যক্তি ভাড়া নিলে বা সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেবেন। কেউ যদি টেলিফোনে বা ফেসবুকে এ ধরনের উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দেয়, তাহলে পুলিশে জানাবেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআইডির ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা এবং অর্গানাইজড ক্রাইমের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক।