করোনার দীর্ঘশ্বাস → এম. নাহিন সিকদার

প্রকাশিত: ৪:৪৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০২০
print news

চলমান প্রায় পাঁচ মাস!
বৈশ্বিক মহামারীর এই সময়ে অনেক অভিজ্ঞতা ই হয়েছে।
কত অচেনা নতুন মুখের সাথে পরিচয় হয়েছে,
কতদিকে যাওয়া হয়েছে,,
কতকিছুই করা হয়েছে বাঁধা বিহনে,, হয়েছে, হয়েছে, অনেক কিছুই হয়েছে।

কত স্মৃতি জড়িত মুহূর্ত গেছে!
গ্রামের চেনা রূপ ফিরে পেয়েছে! সবাই আপন কর্মস্থল ত্যাগ করে শৈশবে অকৃত্রিম ভালোবাসায় বেড়ে উঠা নিজ গ্রামে ফিরেছে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, ভাই-বেরাদার সবার সাথে মিলে এক লিপিহীন, অভাবাত্মক গল্পের কাহিনী রচিত হয়েছে। সবাই একসাথে থাকা, খাওয়া, ঘুরাঘুরি, আড্ডা দেওয়া, কর রকমের খেলা, আরো কতকিছু, করোনা মহামারী যেনো সবাইকে এক সুতোয় বেঁধেছিলো! কখনো করোনা আতংকে বেলা ডুবেছে।

কখনো ছুটির আনন্দে সূয্যিমামা উঁকি দিয়েছে, কখনো বা অনির্দিষ্টকালীন লকডাউনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত ম্লান হয়ে যাওয়ার ভয়ে অমিতাভ দিবাকরের উপর জলধর চড়েছে, কখনো আবার আপন হাতে বুনো কষ্টার্জিত স্বপ্ন লম্বা ছুটিতে বিলীন হয়ে যাওয়ার ত্রাসে উদ্ভাসিত শশী মেঘমন্দ্রে হারিয়ে গেছে। কেউ শুধুই পড়েছে, জ্ঞানার্জন করেছে, আমার মতো কেউ আবার একদম না পড়ে হুদাই কাটিয়ে দিয়েছে, কেউবা নব সাজে সেজেছে, আবার কেউ কেউ নতুন কিছু শিখেছে,
আরো কতকিছু করেছে…….
মোদ্দা কথা সময় কেটেছেই।

ভয়ঙ্কর সিচুয়েশন পার করে আল্লাহর রহমতে বর্তমানে কিছুটা হলেও পরিস্থিতি অনুকূলে। লকডাউন এখন শিথিল,
আস্তে-ধীরে সব আপন গতি ফিরে পাচ্ছে… মানুষও আপন গন্তব্যে পাড়ি জমানো শুরু করেছে।
ক্রমাগত স্রোতে খালি খালি হতে চলেছে সব।
তাই চিত্ত নামক পদার্থটা কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে যাচ্ছে,,
যেতে দিতে চাইছে না এই মঞ্জু সময়টাকে।
মিস করতে চাচ্ছে আরকি।
যদিও এই সময় দেশ বরং পুরো বিশ্ব ক্রান্তিলগ্ন দিয়ে গেছে, ক্রাইসিস মোমেন্ট পার করেছে।
ঐশ্বর্য থেকে দারিদ্র্য সবাই
এক বেড সিচুয়েশনের মধ্য দিয়ে গেছে, অনেকের প্রাণবায়ু উড়ে গেছে, অনেকে আক্রান্ত হয়ে প্রাণান্ত হয়েছে। অনেকে প্রবাসে কুটুম বিনে বেদনার সময় কাটিয়েছে।
বহু মেহনতি মানুষ না খেয়ে থেকেছে। আবার বহুতর পিশাচ ত্রান, প্রণোদনা তথা গরিবের ভাগ অতি চৈতন্যময় ছলে ভোগ করে স্বীয় জঠর জাহান্নামের গর্ত বানিয়েছে। তবু্ও এই সময়টা যেনো কিছুতেই ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছেনা। কারণ, এমন লম্বা ছুটি যে কয়েক শতাব্দী পরেও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। যদিও এই ছুটিতে নিজেকে কোনোকিছুর জন্যই প্রস্তুত করতে পারিনি কুঁড়েমি করে আলতু-ফালতু সময় কাটানো ছাড়া,,!
তারপরও অপ্রত্যাশিত ভাবে
বলতেই হচ্ছে
মিসিং কোয়ারেন্টিন ডেস।

→ এম. নাহিন সিকদার
শিক্ষার্থী
আল জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া চট্টগ্রাম।