বিশ্বাস এমন একটা জিনিস যে জিনিস খুবই মূল্যবান যা একবার হারিয়ে গেলে পুনরায় অর্জন করা মোটেও সম্ভব নই
তাই বলা যায় বিশ্বাস হবে সব সময়ের জন্য। বন্ধন হবে ইস্পাত-দৃঢ়, সব রকমের সম্পর্কের মধ্যে থাকবে বন্ধুসুলভ সমঝোতা তেমনিভাবে বন্ধুত্ব হবে পানির মত পরিষ্কার। বিশ্বাস মানুষের বড় শক্তি যদিও ক্ষমতাশীলতাকে বড় শক্তি বলা হয়। তবুও বিশ্বাস এর মতো দূর্ভেদ্য শক্তিকে ছাপিয়ে নয়।বিশ্বাস আর অবিশ্বাস এর খেলা ঘরে কাউকে বিশ্বাস করা যেমনটা কঠিন তেমনি ভাবে কারো বিশ্বাস এর কেন্দ্রবিন্দু হতে আরো কঠিন ব্যাপার। এই মহীরুহ তে বিশ্বাস কে পুঁজি করে বহু মানুষকে ঠকানোর লোকের অভাব মোটেও কম নই বলা বাহুল্য ঠকানোর মানুষই সব চেয়ে বেশি। সেই তুলনায় বিশ্বাসকে প্রাধান্য দিয়ে আপন চাওয়া কে বিসর্জন দেওয়ার মানুষ নিতান্তই কম। বিশ্বাস এমন এক শক্তি যেটা কিনা ব্যক্তিকে খুব গৌরব ও অর্জনের দাবী নিয়ে আপন চাওয়ার অভিমুখে ঠেলে দেয়।
যেনো এগুলো পাওয়া তার একান্তই কাম্য ছিলো।আচ্ছা মানুষ চাইলে কি, যে কোনো ব্যক্তি, বিষয় বা বস্তুকে বিশ্বাস করে কিংবা আপন করে নিতে পারে?আদৌ কি পেরেছে? পারলেও কি টেকসই হয়েছে? মূল উত্তর হলো পারে না। আবার এ বিশ্বাস তাসের ঘরের মতো সবচেয়ে ভঙ্গুর। এখানে বিশ্বাসের চুলচেরা বৈপরীত্য পরিলক্ষিত হয়। আসলে বিশ্বাস নিজের মধ্যে গচ্ছিত রেখে লালিত করতে হয় প্রতিপালন করতে হয়। কারণ হলো বিশ্বাস মানুষ কে দিন শেষে আশাবাদী করে তুলে।ব্যক্তির মনে প্রাণসঞ্চার করে সে আশা করে হাজার বছর বেঁচে থাকার এমন কি তাকে এই বিশ্বাস বাঁচতে শেখায়।বিশ্বাস করতে বা বিশ্বস্ত হতে হলে যেমন প্রতিটি মুহুর্তে নিজের মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ করে গড়ে নিতে হয়।সময় কে কাজে লাগাতে হয় সময়ের উপস্থিতিতে ব্যাপকতার সাথে শ্রম ব্যয় করতে হয়।তেমনি বলা যায় এ বিশ্বাসে একবার ফাটল ধরলে বা ঘুন ধরলে পুরো বিশ্বাসের দরজায় আচমকা ঘুন পোকা সহ হরেক রকমের ভাঙন সৃষ্টি হয়। জ্ঞানীরা বলে থাকে বিশ্বাস নামক দরজার পেছনেই অবিশ্বাস এর বসবাস। আর এই অবিশ্বাস এর মূলে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে সন্দেহ আর চরম বাস্তবতা তাই জ্ঞানীদের পরামর্শ অবিশ্বাস এর চেয়ে বিশ্বাস করাটায় শ্রেয়। তবে কোনো চিহ্নিত বিশ্বাসঘাতক বা মিথ্যা এমনকি অশুভ শক্তি কে নই।কেননা বিশ্বাস হলো এক টুকরো কাচের বাক্সের মত ঠুনকো একে বাচিঁয়ে রাখতে হয় নিজের মধ্যে অতি যত্নশীল করে জমিয়ে রাখতে হয়। কারণ বিশ্বাস করে মানুষ তার ভবিষ্যৎ এর দিকে পা রাখে।বর্তমান প্রেক্ষাপটে পরিলক্ষিত হয় বেশির ভাগ সম্পর্ক দীর্ঘ দিন স্থায়ী হয় না অতি দূর আগাই না
অথচ ক'দিন আগেই তো সেই সম্পর্কগুলো কত মার্জিত কত নির্মল নিষ্পাপ ছিলো
আরো ছিলো সুন্দর প্রাণবন্ত গোছানো। তাহলে হঠাৎ তাদের মধ্যকার সম্পর্কে শেষ পরিনতি এই সিদ্ধান্ত আসে কেনো?এর পেছনে মহা কোনো কারণ নেই শুধু মাত্র আছে সংশয় অবিশ্বাস যা দুইজনের মধ্যে খুবই অভাব দুইজন দুইজনকে বিশ্বাস করতে না পারা! অনেকেই বলে দুইজনের মনমানসিকতার বৈসাদৃশ্য এবং বৈপরীত্য। এই যে বৈসাদৃশ্য বা বৈপরীত্য এটা কি অবিশ্বাস থেকে জন্ম নেয় নি?অবিশ্বাস যখন জন্ম হয়ে যায়, তখন সবকিছুতেই বিশ্বাসহীনতার অভ্যাস নিজের প্রতি নিজের অবিশ্বস্ত করে গড়ে তোলে। একটি সুন্দর সম্পর্ক মধুর অনুভূতির মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হলে একান্ত দরকার নিখুঁত বিশ্বাস আর শ্রদ্ধা ভক্তি যা একটি সুন্দর সম্পর্কে একান্ত জরুরি। বাস্তবতা হলো বিশ্বাস এর কোনো বিকল্প নেই।একজন বৈজ্ঞানিক এর ভাষায় বলতে গেলে পাওয়া যায় জন মিলটন বলেন তার অন্যান্য বিখ্যাত উক্তির মধ্যে "বিশ্বাস জীবনকে গতিময়তা দান করে, আর অবিশ্বাস জীবনকে দুর্বিষহ করে গড়ে তোলে। জীবনকে সহজ সরল স্বভাবের করতে হলে অবশ্যই বিশ্বাস কে চর্চা করা একান্ত অপরিহার্য। বিশ্বাসকে চর্চা করার মাধ্যমে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সকলে সেক্টরে ঘরে বাহিরে, অফিস আদালতে, ব্যবসা বানিজ্যে এনে দিতে পারে এক অসাধারণ মজাদার স্বাদ। যা পাওয়া যায় আত্নার আত্নিক তুষ্টতা ও মনের আত্নতৃপ্তি। বিশ্বাস হলো যত জটিলতাই তৈরি হোক না কেনো,যত ঝড়ঝাপটা যাই আসুক না কেনো, উভয় পক্ষের কেউ যেনো বিশ্বাসচ্যুত না হয়।এই বিশ্বাস মানুষের বিয়ের আগে বা পরে বলতে কিছু নেই কোনো কথা নেই এই বিশ্বাস হলো সর্বাবস্থায় সব সময় এর জন্য নির্ধারিত বিষয়।প্রকৃতপক্ষে বিশ্বাসীগণই জয়ী।পক্ষান্তরে অবিশ্বাসীগণ ধোঁয়ার জঞ্জালে পরিপূর্ণ যা কিনা অন্ধকারে অবিশ্বাসের মূলে পরাজিত হয়।মূলত একটা কথা প্রাধান্যতা পায় সেটা হলো বিশ্বাস এর দেয়াল যখন নিজেকে ঘিরে তৈরি হয়, তা হয়ে উঠে জীবনে দুর্বার যা অপ্রতিরোধ্য। তখন সে অসাধ্য কে সাধন করে তোলে মুহুর্তে সকল অপ্রাপ্তিকে প্রাপ্তির কাতারে নিয়ে আসে।তার জীবনে যেনো সকল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত তার চামড়ার চোখে যেনো এক প্রকার আলৌকিক আলোর স্ফুলিঙ্গ অনূভুত হয়। সে বলে উঠে সে যেখানে খুশি গমন করতে পারি।
যে মানব সন্তান তার মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি অগাধ ক্ষমতাকে বিশ্বাস স্থাপন করে, তার জন্য সৃষ্টিকর্তাই যথেষ্ট। ইসলামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে পরিলক্ষিত হয় বহু রকমের জলন্ত প্রমাণ যা মানুষের মনে বিশ্বাস এর প্রতি অগাধ আগ্রহ সৃষ্টি করে নিয়মিত
যেমন আমরা দেখি মহান সৃষ্টিকর্তার পয়গম্বর হযরত ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তাকে নমরুদ পুড়িয়ে ফেলার জন্যই আগুনের স্ফুলিঙ্গে নিক্ষিপ্ত করেছিলো কিন্তু মহান রাব্বুল আলামিন এর প্রতি তার পয়গম্বর এর অগাধ বিশ্বাস থাকায় তিনি সেখান থেকে নিমিষেই মুক্তি পেয়েছিলো এটা শুধু বলা যায় স্রস্টার প্রতি নিখুঁত বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে অর্জিত। এমন অসংখ্য উজ্জল দৃষ্টান্ত আমাদের চোখের সামনেই বিদ্যমান যা আমরা সহজে দেখি না
এভাবে প্রতিটি বিশ্বাস এর মাধ্যমে অগম্যকে জয় করা যায়। সম্পর্ক কে নিয়ে যাওয়া যায় যুগের পর যুগ।
তাই বলি
বিশ্বাস হোক বিস্তৃত সরূপ ইস্পাত-দৃঢ় ন্যায়।
লিখেছেন
তাহসিন মোহাম্মদ ঈসমাইল
শিক্ষার্থী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
কক্সবাজার সরকারি কলেজ।
সম্পাদক: জাহাঙ্গীর আলম
©Vorercoxsbazar.com