Warning: Undefined array key "mode" in /home/vorercoxb/public_html/wp-content/plugins/sitespeaker-widget/sitespeaker.php on line 13
সিনহা হত্যায় অভিযুক্ত বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রাম কারাগারে থাকলেও তাকে নির্ধারিত সেল বদলে এখন অজ্ঞাত সেলে রাখা হচ্ছে। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তিনি বিলাসী জীবনই কাটাচ্ছেন সেখানে। এর আগে কারাগারের ভেতর থেকে মোবাইল ফোনে তিনি অহরহ বাইরে যোগাযোগ করছেন— এমন অভিযোগ উঠলেও চট্টগ্রাম কারাগারের কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন না ওসি প্রদীপ।
গত ১২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে চট্টগ্রাম আসার পর থেকেই অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলার আসামি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারেই থাকছেন।
জানা গেছে, সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যায় গ্রেপ্তার ওসি প্রদীপ শুরু থেকেই ছিলেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩২ নম্বর সেলে। এই সেলে ৩২টি কক্ষ রয়েছে। ডিভিশন পাওয়া বন্দিরা একেকজন একেকটি কক্ষে থাকেন। ওসি প্রদীপও এ ধরনের একটি কক্ষেই সাহায্যকারী একজন সঙ্গীসহ থাকতেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে ডিভিশন-১ মর্যাদাপ্রাপ্ত বন্দির সুবিধা উপভোগ করে আসছেন ওসি প্রদীপ।
তিনি ডিভিশন ওয়ার্ডে ভারতীয় নাগরিক জিবরান তায়েবী হত্যামামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া কয়েদি কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ছেলে ইয়াছিন রহমান টিটুর পাশের রুমেই থাকছিলেন।
তবে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, কারাগারের ৩২ সেল ভেঙে এখন ৬৪ সেল করা হচ্ছে। তাই সেখানে আপাতত কোনো বন্দি রাখা হচ্ছে না। ওসি প্রদীপকে ‘অন্য স্থানে’ রাখা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
জেল কোড অনুসারে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়। এছাড়া আদালতের নির্দেশেও কাউকে কাউকে দেওয়া হয় ডিভিশন। ওসি প্রদীপ নৃশংস হত্যামামলার আসামি হওয়ার পরও আদালতের নির্দেশে ডিভিশন সুবিধা পাচ্ছেন। বিধি অনুসারে প্রথম শ্রেণির ডিভিশনপ্রাপ্ত প্রত্যেক বন্দির জন্য আলাদা রুম থাকে। খাট, টেবিল, চেয়ার, তোষক, বালিশ, তেল, চিরুনি, আয়না— সবকিছুই থাকে সেখানে। আর ডিভিশন পাওয়া বন্দির কাজকর্ম করে দেওয়ার জন্য লিঙ্গভেদে আরেকজন ছেলে বা মেয়ে বন্দিও দেওয়া হয়। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা বইপত্র ও তিনটি দৈনিক পত্রিকা পান। তাদের খাবারের মানও ভালো থাকে। চিকন চালের ভাত ছাড়াও সকালে রুটি, ডিম, কলা, ভাজি, বাটার, জ্যাম-জেলি চাইলে সেগুলোও দেওয়া হয়। দুপুরে ভাত-মাছ-মাংস তাদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হয়।
এদিকে ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম কারাগারে থাকা ওসি প্রদীপ তার আত্মীয়-স্বজন ও আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন বলে আদালত আদেশ দিলেও পরে কারাগার থেকে আসা একটি রিপোর্টের ওপর শুনানি শেষে ওই আদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে আদালত জানান, কারাবিধি অনুযায়ী তিনি টেলিফোনে কথা বলতে পারবেন।
সেই থেকে কারাগারের ভেতর থেকে মোবাইল ফোনে ওসি প্রদীপ অহরহ বাইরে যোগাযোগ করছেন— এমন অভিযোগ উঠলেও চট্টগ্রাম কারাগারের কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, মোবাইল ফোনে এখন আর কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন না ওসি প্রদীপ।
সাধারণ বন্দিরা কারাগারের ভেতরে স্থাপন করা মোবাইল বুথ থেকে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারলেও ওসি প্রদীপ সেই সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানিয়ে চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, কারাগারে আটক বন্দিদের মধ্যে যারা উগ্রবাদী, আলোচিত ও নৃশংস হত্যামামলার আসামি মোবাইলে তাদেরকে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে।