![পথেই সন্তান প্রসব, মা ‘পাগলী’ শুনে একটি অ্যাম্বুলেন্সও আসেনি](https://vorercoxsbazar.com/wp-content/uploads/2020/12/PicsArt_12-20-03.50.00.jpg)
![print news](https://vorercoxsbazar.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হলেও সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতালের আশেপাশে সন্ধ্যার পরই বিরাজ করে সুনসান নিরবতা। শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত আটটার কাছাকাছি তখন ঘড়ির কাঁটা। সারাদিনের কাজ শেষ করে সবাই ফিরছিলেন ঘরে। পথচারীদের ব্যস্ত পদযাত্রা মুহূর্তের মধ্যেই থমকে যায়। সবাই এসে ভীড় জমায়। হাসপাতালের পাশে খোলা আকাশের নিচে প্রসব ব্যাথায় কাতরাচ্ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক ‘পাগলী’ মা। বয়স তার ৩৪-৩৫ হবে। পথচারীদের একজন ঘটনা দেখে খবর দেন স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে।
খবর পেয়ে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম ছুটে যান সেখানে। কিন্তু ততক্ষণে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে ফেলেছেন সেই ‘পাগলী’ মা। ইন্সপেক্টর শফিক সেই মাকে নিজের ডিউটির গাড়িতে তুলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ভর্তি করানো হয় ৩২ নম্বর নবজাতক ওয়ার্ডে।
ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম জানান, ‘ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালের সামনেই পাগলীটি প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। এ দৃশ্য দেখে পথচারীদের কেউ একজন আমাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। গিয়ে আমি চমকে যাই। খোলা আকাশের নিচে এই প্রচন্ড শীতের মধ্যেই পাগলীটা এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শফিকুল বলেন, ‘রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চারপাশ। আমি স্থানীয় এক মহিলাকে অনুরোধ করে আনুষঙ্গিক কাজগুলো সম্পন্ন করি। তারপর কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সকে খবর দেই। কিন্তু পাগল শুনে কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষে আমি নিজের ডিউটির গাড়ি দিয়েই তাদেরকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাই। বাচ্চাকে ৩২ নং নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ জানান, ‘খবরটি জানার পর পরই আমি বাচ্চাটিকে নবজাতক ওয়ার্ডে স্পেশাল অবজারভেশনে রাখার নির্দেশ দিয়েছি। বাচ্চা সুস্থ থাকলেও পরবর্তীতে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে— এই আশংকায় তাকে স্পেশাল অবজারভেশনে পরিচর্যা করা হচ্ছে। মাকেও দেখভালের জন্য নার্স ও সিকিউরিটিদের বলা হয়েছে। রোববার (২০ ডিসেম্বর) হাসপাতালে যেন মা ও নবজাতকের সুচিকিৎসা মেলে— সেটা আমি দেখব।’
সুত্র- চট্রগ্রাম প্রতিদিন